কলিঙ্গদেশে যজ্ঞশর্মা নামে এক ব্রাহ্মণ বাস করতেন। তাঁর কোন পুত্র না থাকায়, অনেক দেবতার কাছে প্রার্থনা করার পর একটি পুত্র লাভ করেন।
পুত্র অল্প বয়সেই সবরকম শাস্ত্রে পারদর্শী হয়ে উঠল। বাবা-মার সেবা করেই তার দিন কাটত । কিন্তু এমন গুণবান পুত্রের বয়স যখন আঠারো বছর তখন তার মৃত্যু হলো ।
বাবা-মার মাথায় যেন বজ্রাঘাত হলো । দু’জনে অনেক কান্নকাটি করলেন। মৃতদেহ সৎকারের জন্য গ্রামের সীমানায় চিতা সাজালেন।
এক বৃদ্ধ যোগী বহুদিন ধরে ঐ শ্মশানে যোগাভ্যাস করছিলেন। তিনি আঠার বছরের ঐ ব্রাহ্মণকুমারকে দেখে ভাবলেন আমার জীর্ণশীর্ণ দেহ দিয়ে আর কোন কাজই হচ্ছে না। আমি যদি ঐ ব্রাহ্মণকুমারের দেহে প্রবেশ করি তবে অনেকদিন যোগাভ্যাস করতে পারব। মনে মনে এই সঙ্কল্প করে যোগবলে তিনি সেই দেহের মধ্যে প্রবেশ করলেন । ব্রাহ্মণকুমার সঙ্গে সঙ্গে জীবন ফিরে পেল। যজ্ঞশম পুত্রকে ফিরে পেয়ে আনন্দে হাসতে লাগলেন কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই কাঁদতে আরম্ভ করলেন ।
বেতাল এখানেই গল্প শেষ করে রাজ্যকে প্রশ্ন করল, মহারাজ, পুত্রকে ফিরে পেয়ে যজ্ঞশম প্রথমে কেন হাসলেন আর পরে কেন কাঁদলেন?
রাজা বললেন, পুত্রকে ফিরে পেয়ে ব্রাহ্মণের আনন্দ হওয়াই স্বাভাবিক, সেই আনন্দে তিনি হেসেছিলেন। কিন্তু তিনি পরদেহপ্রবেশনী বিদ্যা জানতেন; ঐ বিদ্যার প্রভাবে পরক্ষণেই জানতে পারলেন পুত্র পুনজীবন লাভ করে নি; যোগী তার যোগ-সাধনার বলে এটা করেছে। এই জন্য পরে কাঁদলেন।
সঠিক উত্তর পেয়ে বেতাল রাজার কাঁধ থেকে নেমে আবার সেই গাছে গিয়ে ঝুলে পড়ল আর রাজাও তাকে পুনরায় কাঁধ নিয়ে চলতে আরম্ভ করলেন। বেতালও তার পঞ্চবিংশতি গল্প আরম্ভ করল।
0 coment�rios: