পরদিন রাজা ভোজ সিংহাসনে বসতে গেলে প্রিয়দর্শনা নামে আর একটি পুতুল এই গল্পটি বললো।
রাজা বিক্রমাদিত্য রাজ্য শাসনকালে এক জ্যোতির্বিদ তাঁর কাছে এসে তাঁকে আশীর্বাদ করে বললেন, সূর্যদেব আপনাকে শৌর্য দিন, চন্দ্র দিন ইন্দ্রত্ব, মঙ্গল দিন সুমঙ্গল, বুধ দিন বুদ্ধি, বৃহস্পতি দিন গুরুত্ব, শুক্র দিন পুত্র, শনি দিন কল্যাণ, রাহু দিন বাহুবল ও কেতু বংশের উন্নতি দান করুন।
রাজা সেই জ্যোতিষীর কাছে জানতে চাইলেন, এ বৎসর কোন গ্রহের কোথায় স্থান তা বর্ণনা করুন।
জ্যোতিষী বললেন, এ বৎসর রাজা রবি, মন্ত্রী মঙ্গল ও মেঘাধিপতি। শনি রোহিনী শকট ভেদ করে যাবে, সেই কারণে এ বৎসর অনাবৃষ্টি হবে।
জ্যোতিষীর এই কথা শুনে রাজা বললেন, এর প্রতিকারের কি কোন উপায় নেই?
জ্যোতিষী বললেন, অবশ্যই আছে। গ্রহহোম করলে বৃষ্টি হয়।
কথা বলে হোম অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করলেন। অনুষ্ঠান শেষে রাজা চাল, কাপড় প্রভৃতি দান করে ব্ৰাহ্মণদের সন্তুষ্ট করলেন। তারপর দীন, অন্ধ, বধির, পঙ্গু, অনাথ প্রভৃতিদের তুষ্ট করলেন। কিন্তু তাতেও বৃষ্টি হল না!
গ্রহহোম অনাবৃষ্টির ফলে দেশের লোক হাহাকার করতে লাগল।
রাজাও সকলের দুঃখে দুঃখিত হয়ে একদিন যজ্ঞগুহে বসে যখন এই কথাই চিন্তা করছেন তখন আকাশবাণী হল--হে রাজন, যদি বত্রিশটি লক্ষণযুক্ত কোন পুরুষের মুন্ডু কেটে দেবীর চরণে উৎসর্গ করতে পার তবে তোমার মনের ইচ্ছা পূর্ণ হবে।
এই আকাশবাণী শোনার পর রাজা দেবীকে প্রণাম নিবেদন করে যেই নিজ মস্তকে খড়্গাঘাত করতে উদ্যত হবেন অমনি দেবী তার হাতখানি ধরে বললেন, হে রাজন, তোমার ধৈর্যগুণ দেখে আমি খুব খুশি হয়েছি, তুমি তোমার ইচ্ছা মত বর গ্রহণ কযর।
রাজা বললেন, হে দেবী, যদি আমার উপর প্রসন্ন হয়েছ তবে রাজ্যের এই অনাবৃষ্টি দূর করো।
দেবী তথাস্তু বলে অন্তধান করলেন। রাজাও আনন্দিত চিত্তে সভায় উপস্থিত হলেন।
পুতুল বললো, মহারাজ, আপনি কি প্রজাদের জন্য এতখানি ত্যাগ করতে পারবেন?
ভোজরাজ সরে দাঁড়ালেন।
রাজা ভোজের গল্প আমার খুবই ভালো লাগে
উত্তরমুছুন