করট বলতে লাগল—মগধ দেশে এক জায়গায় শুভদত্ত নামে এক লোক বাস করত। সেখানে একদিন একটা ঘর তৈরি করতে করতে এক ছুতোরের ভীষণ খিদে পেয়ে গেল। তখন ছুতোর একটা লম্বা কাঠ করাত দিয়ে অর্ধেকটা চিরে সেই চেরা জায়গায় একটা কাঠের খিল লাগিয়ে খেতে চলে গেল। ভাবল খেয়ে এসেই বাকি কাজটা শেষ করে ফেলবে।
এদিকে একদল বানর কোথা থেকে এসে হাজির হল সেখানে, ওরা চেরা কাঠটা নিয়ে মনের উল্লাসে হুটোপুটি করতে লাগল। এই রকম বাঁদরামি করতে করতে একটা বানর সেই চেরা জায়গায় বসে কাঠের খিলটা নিয়ে টানাটানি শুরু করে দিল। এদিকে কাঠের খিলটা তো আলগাই ছিল। খিলটা ধরে টানাটানি করতেই ওটা খুলে গেল। ব্যাস আর যায় কোথায়! ওই বানরের লেজটা গিয়ে আটকে গেল চেরা কাঠের ফাঁকে। লেজ আটকে যাওয়ায় বানর তো ভয়ে চিৎকার শুরু করে দিল। চিৎকার শুনে অন্য বানরগুলো ভয়ে পালিয়ে গেল ! একটা বানরও ওই বানরটার জন্য অপেক্ষা করল না। ছুতোর ফিরে এসে ওই লেজ আটকে পরা বানরকেই দেখতে পেল, বাকি বানরগুলোতো সব পালিয়ে গেছে।
ছুতোর মনের সুখে ওই বানরকে খুব পেটাল। ছুতোরের মার খেয়ে বেচারা ধরাশায়ী হয়ে পড়ে রইল।
ছুতোর মনের সুখে ওই বানরকে খুব পেটাল। ছুতোরের মার খেয়ে বেচারা ধরাশায়ী হয়ে পড়ে রইল।
এতখানি বলে করট দমনের দিকে মুখ তুলে বলল, এইজন্যই বলছি অন্যের কাজ কখনোই করা উচিত নয়। বানর অন্যের কাজ করতে গিয়েই তো এমন ৰিপদ ডেকে আনল।
তবু করট বলল, না না, আমাদের উচিত প্রভুর প্রতি নজর রাখা। যতই হোক, পশুরাজ তে আমাদের বন্ধু।
দমনের কথায় করট বলল, আমাদের নজর রাখার কোনো দরকার নেই।
মণিবের প্রতি সব নজর রাখবে প্রধানমন্ত্রী। ওর উপরেই সব ভার দেওয়া আছে। এখানে আমাদের করার কিছুই নেই। তা ছাড়া আমরা হচ্ছি আদার ব্যাপারী, আমাদের জাহাজের খবর রাখার দরকার কি? যে মনিবের উপকারের মতো পরের কর্তব্য করতে যায় সে হচ্ছে সেই গাধা, যে চিৎকারের জন্য পিটুনি খেয়েছিল এবং সেই গাধার মতোই তাকেও দুঃখভোগ করতে হয়।
করটের কথায় দমন বলল, সে কি রকম শুনি? গাধা কি এমন কাজ করেছিল যার জন্য তাকে মার খেতে হয়েছিল? করট তখন বলল, ঠিক আছে, তা হলে মন দিয়ে শোন--
পঞ্চতন্ত্রের গল্পগুলো একটি আর একটি গল্পের সাথে সম্পর্কযুক্ত। ফলে প্রথম থেকে না পড়লে কিছুই বোঝা যাবে না। গল্পগুলো শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে চাইলে গল্পের তালিকা ব্যবহার করো।
0 coment�rios: