আমাদের আদি পিতা হলেন কিততুঙ। তিনি এই পৃথিবী সৃষ্টি করছেন, তিনি সমস্ত মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। এই আদি পিতা কিততুঙ-এর একটি ছেলে ছিল। তার নাম মারু।
মারু একদিন বড় হল। সে ধনুক হাতে তীর ছুড়তে পারে। তীর-ধনুক তার নিত্যসঙ্গী। তার বিয়ের বয়স হল।
কিততুঙ মারুর বিয়ে ঠিক করলেন এক সুন্দরী মেয়ের সঙ্গে। এই মেয়ে হল রুয়ানগান রাজার মেয়ে। রুয়ানগান রাজা থাকেন সেই দূর আকাশে। বিয়ে হয়ে গেল।
সবাই সুখে শান্তিতে বাস করতে লাগল।
এমনি করে দশ বছর কেটে গেল। মারুর বউয়ের ছোট বোনের বিয়ে ঠিক হয়ে হল। সেই বিয়েতে জামাই মারু আর মেয়েও গেল আকাশে। অনেকদিন পরে মারু আবার এল আকাশে।
বরযাত্রীরা এসেছে। বিয়ে শুরু হবে। হঠাৎ কি একটা ব্যাপার নিয়ে বচসা শুরু হল। বচসা থেকে ঝগড়া। ঝাগড়া থেকে হাতাহাতি-মারামারি। গোলমালের মধ্যে মারু রুয়ানগান রাজার হাতে খুব মার খেল। বেচারি মারু। তার হাত থেকে তার নিত্যসঙ্গী অতি প্রিয় ধনুকটা ছিটকে পড়ল। আর মারু মারা গেল।
এই ছেলের মৃত্যুর খবর এসে পৌছল। বাবা কিততুঙ তাড়াতাড়ি ছুটে এলেন। কেন এমন হল দেখা দরকার। এসে দেখলেন, তার প্রিয় ছেলে মাটিতে পড়ে রয়েছে, পাহাড়ের মতো অচল হয়ে। আর ছেলের হাতের ধনুক আকাশে ঝুলে রয়েছে। অনেকক্ষণ তাকিয়ে রইলেন কিতকুঙ।
তারপরে ভেজা গলায় আকাশের পানে তাকিয়ে ধনুককে লক্ষ্য করে বললেন,‘ও আমার প্রিয় মারু, তুমি আর কোনদিন প্রাণ ফিরে পাবে না। তুমি চিরকালের জন্য চলে গেলে। কিন্তু পৃথিবীর সব মানুষ তোমার ধনুক দেখতে পাবে। তুমি হবে আকাশের রামধনু। তোমার রঙের বাহারে সবাই মুগ্ধ হবে। তোমার রূপের কথা সবাই বলবে। ধনুকের মধ্যেই রামধনু হয়ে তুমি চিরকাল বেঁচে থাকবে।
আকাশে রামধনু বিচিত্র রঙ ছড়িয়ে এদিক থেকে ওদিক দেখা দেয়। মারুর বিধবা বউ রামধনু দেখে, বেদনায় সে কেঁদে ওঠে আর তার চোখের জল বৃষ্টিধারা হয়ে আকাশ থেকে ঝরে পড়ে।
0 coment�rios: