Home Top Ad

Responsive Ads Here

Search This Blog

        এক সময় এক গরিব লোক ছিল। অনেক তার বয়স। চোখের সে ভালো দেখত না, কানে শুনত খুব কম আর সব সময় থরথর করে কাঁপত তার হাটু ৷ খাবার টেবিলের...

নাতি আর ঠাকুরদা - জার্মানের উপকথা

        এক সময় এক গরিব লোক ছিল। অনেক তার বয়স। চোখের সে ভালো দেখত না, কানে শুনত খুব কম আর সব সময় থরথর করে কাঁপত তার হাটু ৷ খাবার টেবিলের সামনে বসে খাবার সময় হাত থেকে তার খসে পড়ত চামচে। ফলে টেবিল-চাকার উপর সুপ উপছে পড়ত, তার কষ বেয়েও সুপ গড়াত। তার ছেলে আর ছেলের বউ বুড়োকে একেবারে বরদাস্ত করতে পারত না, ভারি ঘেন্না করত তাকে। শেষটায় ঘরের এক কোণে উনুনের পিছনে তাকে তারা সরিয়ে দিল। পুরনো একটা মাটির ভাড়ে তাকে তারা নামমাত্র খেতে দিত। প্রায়ই জল-ভরা চোখে বিষণ্ণ মুখে খাবার টেবিলের দিকে সে থাকত তাকিয়ে। একদিন তার হাত কেঁপে মাটির সেই ভাড়টা মেঝেয় পড়ে ভেঙে গেল। তাই দেখে তার ছেলের তরুণী বউ ভীষণ রেগে তাকে খুব গালি-গালাজ করল। বুড়ো লোকটি ভয় পেয়ে কোনো জবাব দিল না। মাথা হেট করে শুধু ফেলল দীর্ঘশ্বাস। বুড়োর জন্যে দু ফাদিং দিয়ে তারা কিনে আনল কাঠের একটা বাটি আর সেই বাটি থেকেই বুড়ো লোকটিকে খেতে হত খাবার।

        কিছুদিন পরে বুড়ো লোকটির ছেলে আর ছেলের বউ দেখল তাদের চার বছরের ছোটো ছেলেকে মেঝেয় কাঠের নানা টুকরো জড়ো করতে।
        তার বাবা প্রশ্ন করল, “ওখানে কী করছিস?”
        ছেলেটি বলল, “একটা জাবনা বানাচ্ছি। তুমি আর মা যখন বুড়ো হবে তখন এতে করে খেতে দেব।”
        শিশুর কথা শুনে বুড়ো লোকটির ছেলে আর ছেলের বউ চুপচাপ পরম্পরের দিকে খানিক তাকিয়ে থেকে কাঁদতে শুরু করে দিল। তার পর শিশুটির ঠাকুদাকে আবার নিয়ে এল তাদের খাবার টেবিলের সামনেকার চেয়ারে। সেইদিন থেকে বুড়ো লোকটির সঙ্গে তারা খেত। আর কোনোদিন তাকে কোনো কড়া কথা বলত না।

0 coment�rios: