অনেক সময় বাদশা বীরবলকে গল্প বলতে বললে তিনি তার মনের মতো অনেক গল্প বলতেন ;
একদিন মসজিদে এক নবীন মোল্লা নিযুক্ত হয়ে এলেন। নতুন মোল্লার দাড়ি ছিল লম্বা।
কয়েকদিন দেখছেন তিনি, মসজিদে ধর্মউপদেশ দেওয়ার সময় শ্রোতাদের মধ্যে একজনকে প্রতিদিন বসে বসে কাঁদতে।
মনে মনে লোকটির প্রতি খুব প্রীত হলেন নতুন মোল্লা। একদিন তিনি ধর্ম-উপদেশ দেওয়ার পর বললেন, 'আমার শ্রোতাদের মধ্যে প্রকৃত ধাৰ্মিক শুধু ওই একটি ব্যক্তিই আছে। কেননা আমি রোজই লক্ষ করছি—আমার ধর্ম উপদেশ শোনার সময় উনি নীরবে অশ্রুপাত করে যান। এতে বোঝা যায় উনিই প্রকৃত ধামিক।’
একদিন শ্রোতাদের মধ্যে একজন সেই লোকটিকে জিজ্ঞেস করল,‘আচ্ছা সাহেব, আমরা এতদিন ধরে মোল্লাজীর উপদেশ শুনছি, কিন্তু একদিনের জন্যও তো আমাদের হৃদয় আৰ্দ্ৰ হয়নি বা কাঁদতে পারিনি। কিন্তু আপনি রোজ ওঁর ধর্ম-উপদেশ শুনে এমন কাঁদেন কেন? . লোকটি চোখের জল মুছে বলল, আমি মোল্লা সাহেবের বক্তৃতা শুনে কাঁদি না ভাই। মোল্লাজীর দাড়ির মতো দাড়িওয়ালা আমার একটা ছাগল ছিল, দু'মাস হল মারা গেছে। ছাগলটিকে আমি প্রাণের চেয়ে ভালবাসতাম। ছাগলটি যখন ঘাস খেত তখন তার দাড়ি যেমন নড়ত, মোল্লাজী যখন মাথা নড়ে নেড়ে উপদেশ দেন, তখন ওঁর দাড়ি ঠিক তেমনি ভাবে নড়ে। আমি ওই দেখবার জন্যই রোজ মসজিদে আসি, আর মোল্লাসাহেবের দাড়ি নাড়া দেখে ছাগলটির কথা বারবার মনে পড়ায় কাঁদি। আমি মোল্লার উপদেশ এখানে শুনতে আসি না ভাই।
0 coment�rios: