আগে অনেক কিছু ছিল, মানুষ ছিল না। দেবতা প্রথম মানুষ সৃষ্টি করলেন। তিনি চন্দ্র থেকেই অংশ নিয়ে আদি মানব সৃষ্টি করলেন। তার নাম বা-আতসি। আস্তে আস্তে আঙুল দিয়ে টিপেটুপে তিনি মানুষটার দেহ গড়ে তুললেন। তারপরে মসৃণ কালো চামড়া দিয়ে দেহটি দিলেন ঢেকে। সুন্দর দেহ তৈরি হবার পরে তিনি দেহের মধ্যে রক্ত ঢেলে দিলেন। মানুষ তখন প্রাণ পেল। আদি মানব,—প্রথম পিতা বা-আতসি চলেফিরে বেড়াতে লাগল।
দেবতা বা-আতসিকে ডেকে কানে কানে বললেন, ‘তুমি প্রাণ পেলে। তুমি আমার নতুন সৃষ্টি। এবার থেকে তোমার ছেলেমেয়ে হবে। সেই ছেলেমেয়ে পৃথিবী ছেয়ে ফেলবে। কিন্তু তুমি তাদের একটা ব্যাপারে সাবধান করে দেবে। এই নিষেধ তারা যেন মেনে চলে। নইলে সর্বনাশ হবে। সবাই যেন মেনে চলে। বনে যত গাছ আছে তার ফল তারা খাবে। সব গাছের ফল খেতে পারবে। কিন্তু তাহু গাছের ফল কখনও স্পর্শ করবে না। হ্যাঁ, তাহু গাছের ফল। ছেলেমেয়েদের বলে দেবে।
অল্পদিনের মধ্যে বা-আতসির অনেক ছেলেমেয়ে হল। ছেলেমেয়ে একটু বড় হলেই সে দেবতার এই নিষেধের কথা তাদের জানিয়ে দেয়। নিষেধ মেনে চলতে বলে। তারপর একদিন বয়স হলে বা-আতসি আকাশে দেবতার কাছে চলে গেল। অনেক ছেলেমেয়ে পৃথিবীতে রইল।
প্রথম প্রথম সবাই সে নিষেধের কথা মেনে চলত। আর তাই সবাই খুব সুখে থাকত। বড় আনন্দ, বড় সুখ, বড় শান্তি।
এখন হয়েছে কি, একদিন একটি মেয়ের খুব ইচ্ছে হল সে ওই নিষিদ্ধ ফল খাবে। সে তখন মা হতে চলছে, সে গর্ভবতী। কিছুতেই ইচ্ছে আর লোভকে দমন করতে পারছে না। সে তার স্বামীকে বলল, ওই ফল তাকে দিতেই হবে। সে খাবেই। স্বামী অবাক হল, আদি পিতার নিষেধের কথা বলল। ফল দিতে রাজি হল না। কিন্তু বউ বারবার বলাতে স্বামী ভাবল, লুকিয়ে দিলে কেউ তো আর জানতে পারবে না। বনের গভীরে নিয়ে গিয়ে সে বউকে ফল দিল। বউ ফল খেল। ফলের বীজগুলো পাতায় জড়িয়ে রাখল।
চন্দ্র আকাশ থেকে সব দেখলেন। দেবতাকে বলে দিলেন। দেবতা ভীষণ রেগে গেলেন। মানুষ তার নিষেধ আমান্য করেছে? আর এই নিষেধ না মানার জন্য দেবতা শাস্তি দিলেন। তিনি মানুষের মধ্যে মৃত্যুকে পাঠিয়ে দিলেন।
0 coment�rios: