একবার এক মোরগ আর মোরগ-বউ স্থির করল বেড়াতে বেরুবে। চারটে লাল চাকা দিয়ে মোরগ-বউ একটা জুড়িগাড়ি তৈরি করাল। সেটায় জুতে দেওয়া হল চারটে ইঁদুর। গাড়িতে বরের পাশে গিয়ে বসল মোরগ-বউ। গাড়িটা খানিক যেতে-না-যেতে তাদের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল এক বেড়ালের ৷ বেড়াল জিজ্ঞেস করল, “কোথায় তোমরা চলেছ?”
মোরগ-বউ বলল, “চলেছি মিস্টার বাসকার্টের সঙ্গে দেখা করতে।”
বেড়াল বলল, “আমাকেও সঙ্গে নিয়ে চলো।”
মোরগ-বউ জবাব দিল, “সানন্দেই নিয়ে যাব। পেছনে গিয়ে বোসো, যাতে না পড়ে যাও।”
“সাবধান সাবধান অতিশয়—
লাল চাকা নোংরা না হয়।
ক্ষুদে চাকা ঘোর রে
ক্ষুদে ইঁদুর টান রে
জলদি চল জলদি চল
বাসকার্টের বাড়ি চল।”
যেতে-যেতে তাদের সঙ্গে পথে দেখা হয়ে গেল একটা জাঁতা-পাথর, একটা পাতিহাঁস, একটা ডিম, একটা আলপিন আর একটা ছুঁচের। তারা প্রত্যেকেই গাড়িটায় যেতে চাইল। তাই তাদের প্রত্যেককেই তুলে নেওয়া হল গাড়িতে। আর সবাই মিলে তারা চলল মিস্টার বাসকার্টের সঙ্গে দেখা করতে। কিন্তু পৌছে তারা দেখে মিস্টার বাসকার্ট বাড়িতে নেই। ইঁদুররা গেল গোলাবাড়িতে থাকতে, মোরগ আর মোরগ-বউ উড়ে বসল একটা বাঁশের উপর, বেড়াল গিয়ে বসল উনুনের সামনেকার কম্বলে, পাতিহাঁস গিয়ে বসল কল-ঘরের কলে, ডিম গুটিগুটি মেরে উঠে পড়ল তোয়ালের মধ্যে, আলপিন গিয়ে নিজেকে আটকে ফেলল চেয়ারের কুশনে, ছুঁচ লাফিয়ে বিছানায় উঠে সেঁধুল বালিশের মধ্যে আর জাঁতা-পাথর গিয়ে উঠল দরজার উপর। তার পর মিস্টার বাসকার্ট বাড়ি ফিরে গেলেন আগুন জ্বালাতে। কিন্তু বেড়াল তার মুখে দিল ছাই ছুড়ে। তিনি দৌড়ে কল-ঘরে গেলেন মুখ ধুতে। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে পাতিহাঁস তাঁর মুখে জল ফেলল কুলকুচো করে। তোয়ালে দিয়ে তিনি গেলেন মুখ মুছতে। ডিমটা অমনি ফেটে তাঁর চোখের পাতায় গেল আটকে। তার পর বিশ্রাম নেবার জন্য তিনি গেলেন চেয়ারে বসতে। কিন্তু আলপিনটা তাকে মারল খোঁচা। দারুণ রেগে তিনি পড়লেন বিছানায় ঝাঁপিয়ে। সঙ্গে সঙ্গে ছুঁচটা তাঁর গায়ে বিঁধে গেল। হাউমাউ করে চেঁচিয়ে লাফিয়ে উঠে তিনি গেলেন ছুটে বাড়ি থেকে বেরুতে। অমনি সামনের দরজার উপরকার জাঁতা-পাথর তার মাথায় পড়ে তাকে পিষে মারল। অতএব মিস্টার বাসকার্ট যে ছিলেন অতিশয় বদ লোক তাতে সন্দেহ নেই।
0 coment�rios: